মাগুরা থেকে হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হুক্কা

মাগুরা সদর

 

মাগুরা সংবাদ :

দেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে গ্রাম পেয়েছে সেই উন্নয়নের ছোঁয়া। বদলেছে মানুষের অভ্যাস রুচি সহ আচার আচরণ। এখন যে ছেলেটা প্রথমে ধূমপান করতে সিগারেট দিয়ে শুরু করে এরপর সে একে একে গাজা, ইয়াবা, হিরোইন, আফিন ,মদ খেতে শুরু করে। কিন্তু এখান থেকে ২০ বছর আগেও সকল মানুষের ধূমপানের প্রথম হাতে খড়ি হত হুক্কার মাধ্যমে। প্রতিবারই একটি করে হুক্কা থাকতো আর সেটা দেখাই যায় না।ক্রমান্বয়ে মাগুরা থেকে হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হুক্কা। এক সময় সাধারণ মানুষের কাছে ধুমপানের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয় ছিল এই ‘হুক্কা”। ৫০/৬০ দশকেও জনপ্রিয় ধুমপানের মাধ্যম ছিল হুক্কা। এক সময় বঙ্গদেশের কৃষক-শ্রমিক বাড়ির উঠোনে সকাল দুপুর ও বিকালে কাজের ফাঁকে আয়েসী ভঙ্গিতে এক ছিলিম তামাক দিয়ে পরমান্দে হুক্কা টানার আনন্দ ছিল ভিন্ন মাত্রার। জমিদার জোতদার ও গ্রামের মোড়লরা নানাভাবে তামাক তৈরি করে হুক্কায় টান দিয়ে পরম আনন্দে তৃপ্তির স্বাদ নিত। হুক্কা যেভাবে তৈরি হতঃ ঝুনা নারিকেলের একটা মালই দুটো ফুটো করে তার উপর কারুকার্য করা একটি কাঠের নল তৈরি করে তাতে মাটির তৈরি ছিলিম বা কলকি দিয়ে নারিকেলের মালই ভর্তি পানি ভরালেই হুক্কা হয়ে যায়। আগের আমলে জমিদার জোতদারা পিতলের হুক্কা ব্যবহার করত। যার প্রচলন এখন দ্রুত হারিয়ে গেছে। সে সময় ধনী-গরীব প্রায় সকলের বাড়িতেই হুক্কার প্রচলন ছিল চোখে পড়ার মতো। গ্রামের বিভিন্ন বৈঠক খানায় মেহমানদের জন্য প্রধান আকর্ষণ ছিল হুক্কা। যে কোনো বয়সের ছেলে ও বয়স্করা হুক্কার নেশায় মাতোয়ারা ছিল। বর্তমান প্রজন্মে হুক্কা খাওয়াতো দুরের কথা অনেকে চোখেই দেখেনি। কারণ এসময়ে হুক্কার জায়গা দখল করে নিয়েছে বিড়ি, সিগারেট, হুইস্কি, হেরোইন, গাজাঁসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য। যার মধ্যে ক্ষতিকর নিকোটিন রয়েছে অধিক হারে। তারপরও এই মরণনেশায় জড়িয়ে পড়েছে উঠতি বয়সের যুব সমাজ। যাদের নিয়ে দেশের সকল অবিভাবক মহল থাকেন সব সময় উদ্বিগ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.