মাগুরা শ্রীপুরে সুদখোরের কবলে সর্বশান্ত অসহায় একটি পরিবার

শ্রীপুর

মাগুরা সংবাদ:

শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি:

মাগুরার শ্রীপুরে সুদখোর সুরুজ শেখ ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগমের কবলে সর্বশান্ত হয়েছে অসহায় একটি পরিবার। সুদখোর এ দম্পতি উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিন্দী গ্রামে বসবাস করে। গোয়ালপাড়া গ্রামের মোতালেব বিশ্বাসের স্ত্রী এলাচি বেগম ওই দম্পতির কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ধার হিসেবে নেন। পরে বিভিন্ন সময় ১৬ লাখ টাকা পরিশোধ করার পরেও ১৩ লাখ টাকা দাবি করছে সুদখোর ওই দম্পতি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এলাচি বেগম সুদখোর ওই দম্পতির বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হরিন্দী গ্রামের ফরিদা বেগমের কাছ থেকে গোয়ালপাড়া গ্রামের এলাচি বেগম ১ লাখ টাকা ধার হিসেবে নেন। ফরিদা বেগম বিভিন্ন এনজিও থেকে ১৬ লাখ টাকা লোন নিয়ে সুকৌশলে এলাচি বেগমকে দিয়ে পরিশোধ করে। ১ লাখ টাকার পরিবর্তে এতগুলো টাকা নেওয়ার পরেও তিনি এখনও ১৩ লাখ টাকা পাওয়ার দাবি করে আসছে। টাকা দেওয়ার অপারগতা স্বীকার করায় ফরিদা বেগম গত ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার এলাচি বেগমের বাড়িতে হামলা করে।

রোববার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সুদখোর দম্পতির কবলে শুধু একটি না বরং বেশকয়েকটি পরিবার সর্বশান্ত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীদের নামে ভূয়া স্ট্যাম্প ও ভূয়া চেক জালিয়াতির মাধ্যমে জিম্মি করে সুদের টাকা আদায় করে। সুদখোরের যন্ত্রণায় এলাচি বেগম বেশ কয়েকবার আত্নহত্যার চেষ্টাও করেছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এলাচি বেগম বলেন, আমি ফরিদা বেগমের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ধার হিসেবে নিই। সে বিভিন্ন এনজিও থেকে কিস্তি তুলে আমাকে দিয়ে ১৬ লাখ টাকা পরিশোধ করাই। টাকার জন্য আমার বাড়ি থেকে ৩ টি মেহগনি গাছ জোরপূর্বক কেটে নিয়ে নতুন ঘর দিয়েছে। রাস্তা থেকে বেশ কয়েকবার আমার ছেলের কাছ থেকে ভ্যান কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। জোরপূর্বক আমার ছেলেকে দিয়ে স্ট্যাম্পে সই করে নিয়েছে, ব্যাঙ্ক চেক নিয়েছে। বাধ্য হয়ে আমি ওদের সব কথায় শুনেছি। ওদের যন্ত্রণায় আমার মরা ছাড়া কোন উপায় নেই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফরিদা বেগম বলেন, টাকাটা সুদে দেওয়া ছিলো না। আমি জমি বন্ধক বাবদ তাকে টাকা দিয়েছিলাম। টাকা পাবো তাই গাছ কেটেছি। তার কাছ থেকে আমি এত টাকা নেয়নি। টাকা আদায়ের জন্য ওদের বাড়িতে গেয়েছিলাম কিন্তু তাদের উপর আমি হামলা করিনি৷

শ্রীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.