মাগুরায় অবস্থানরত পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নিকট আমাদের অবস্থান সম্পর্কে……

বাংলাদেশ

মাগুরা সংবাদঃ

 

আজ আবাইপুর দিবস, ১৯৭১ সালের এইদিনে শৈলকুপার আবাইপুর যুদ্ধে শহীদ হয় ৪১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এই যুদ্ধের একজন বীর সেনানী, শৈলকুপার কৃতি সন্তান সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিশ্বাস লুৎফর রহমান। সেদিনের ঘটনা নিয়ে তাঁর স্মৃতিচারণ!! ——আজ ১৪অক্টোবর। আমার মুক্তিযুদ্ধ কালীন বেদনাময় স্মৃতি। স্থান ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার আবাইপুর ওয়াপদা ভবন ও আনুমানিক ১কিলোমিটার দূরে ক্যানাল। ১৩ অক্টোবর ১৯৭১ সন। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমনের জন্য আমাদের এ্যাম্বুশসহ অবস্থান। ওয়াপদাভবন সাইডে অবস্থান নেন কমান্ডার নজরুল ইসলাম, সার্জেন্ট মজিবুর রহমান, গোলাম রইচ, প্রমূখ
। ক্যানাল সাইডে মুজিব বাহিনীর
কমান্ডার হিসেবে আমার নেতৃত্বে আমার দলের সকল সদস্য। আমার সাথে ছিল এফ,এফের রওশন।
সারারাত এ্যাম্বুসে অবস্থান নেওয়ার কারনে রাজাকার বাহিনীর সহযোগীরা মাগুরায় অবস্থানরত পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নিকট আমাদের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করায় গভীর রাতে তিন দিক দিয়ে হানাদার বাহিনী আমাদের দুদিকের অবস্থান ঘিরে ফেলে। রাতের অন্ধকারে আমরা কিছুই টের পাই নি।
১৪ অক্টোবর অতি ভোরে ঘন কুয়াসার মধ্যে ভারী অস্ত্র দিয়ে পরিকল্পিত ভাবে সার্চ লাইট নিক্ষেপ করে বৃষ্টির মত গুলি বর্ষণ করতে থাকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী। তবুও অসীম সাহস, অটুট মনোবল ও বীরত্বের সাথে মরণপণ যুদ্ধ চালিয়ে যাই আমরা। এ অসম যুদ্ধে অত্যাধুনিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে
বীরের মত লড়াই করে শহীদ হন কমান্ডার নজরুল সহ ১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বন্দী হন ৬ জন। তাঁদের শৈলকুপা বিরিজ ঘাটে গুলি ও বেয়োনেট চার্জ করে হত্যা করা হয় । পরম করুণাময় আল্লাহ র মেহেরবানি তে
কিভাবে বেঁচেছিলাম তা মনে পড়লে আজও শিহরিত হয়ে উঠি।
আজও এ বেদনাবিদুর দুঃখময় স্মৃতি বিজড়িত দিনটির ঘটনা মনে হলেই আমি হারিয়ে যায় ১৯৭১ এ।
জীবন সায়াহ্নে এসেও প্রতিশোধের আগুনজ্বলে ওঠে আমার হৃদয়ে।
আজ এ দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণকরছি আবাইপুর যুদ্ধে নিহত শহীদ কমান্ডার নজরুল সহ সকল শহীদদের যাঁদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এ স্বাধীন বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.