মাগুরা,যশোর ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে জিনের বাদশাসহ আটক ৩

বাংলাদেশ মাগুরা সদর

মাগুরা সংবাদ :

 

কাগজ হয়ে যাবে টাকা’, ‘মন্ত্রবলে অসুস্থ ব্যক্তি হবেন সুস্থ’ আরো অনেক ক্ষমতা। তিনি হলেন জিনের বাদশা। তবে তার নিজের ক্ষমতা তাকে রক্ষা করতে পারেনি। ধরা খেয়েছেন সিআইডির হাতে।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি কথিত জিনের বাদশা তারিকুল ইসলামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত মঙ্গলবার ঢাকা, যশোর ও মাগুরায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্য তিনজন হলেন- আব্দুল্লাহ বিশ্বাস, আল মাসুম ও সাইদুল ইসলাম রাজু।

বুধবার ঢাকায় সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে সিআইডি।

অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, ভুক্তভোগী মো. আব্দুল খালেক খানের স্ত্রী ও সন্তান দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল। এর মধ্যে পরিচয় হয় কথিত ‘জিনের বাদশা’ তারিকুল ইসলামের সঙ্গে। যোগাযোগের এক পর্যায়ে ‘জিনের বাদশা’ খালেকের স্ত্রী-সন্তানের চিকিৎসা শুরু করেন। ওষুধে খালেকের স্ত্রী-সন্তান কিছুটা সুস্থ হয়। সুস্থ হওয়ার পর ‘জিনের বাদশার’ প্রতি খালেকের বিশ্বাস জন্মে।

পরে ওই দম্পত্তিদের লোভনীয় প্রস্তাব দেয় জিনের বাদশা। তাদের যত টাকা দরকার তত টাকা ‘জিনের বাদশা’ তৈরি করে দিতে পারবেন। প্রমাণ হিসেবে ‘জিনের বাদশা’ খালেকের সামনেই একটি বালতির মধ্যে রাখা সাদা কাগজে এক হাজার টাকার চকচকে নোট তৈরি করে দেয়।

আরো বেশি বিশ্বাসের জন্য খালেক জিনের বাদশাকে বলেন, আপনি কিছু পুরাতন টাকা তৈরি করে দেখান। এরপর তিনি ওই বালতির মধ্যে কিছু পুরাতন টাকাসহ ১৫ হাজার তৈরি করে দেখান। ম্যাজিকের মতো এমন ঘটনা দেখে খালেকের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়।

এসব দেখে খালেক জিনের বাদশাকে ছয়কোটি টাকা তৈরি করে দেয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু সেই টাকা তৈরি করতে এক কোটি ৬৬ লাখ টাকার কোরআন শরীফ কিনতে বলা হয়। যা জিনের মাধ্যমে বিশ্বের সব দেশের মসজিদে দেয়া হবে। এতে রাজি হন খালেক।

জিনের বাদশার কথা অনুযায়ী, বাজার থেকে ৬ কার্টন এ ফোর সাইজের সাদা কাগজ কিনে আনেন তারা। পরে ‘জিনের বাদশা’ বলেন, আপনারা যতদিন কোরআন শরীফ কেনার জন্য এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা দিতে পারবেন না ততদিন কার্টনটি খোলা যাবে না। এ কথায় বিশ্বাস করে আব্দুল খালেক কার্টনটি নিয়ে ঘরের এক কোনায় রেখে দেয়।

পরে দফায় দফায় এক কোটি ৬৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় জিনের বাদশা। বাকি থাকে আরো দুই লাখ। সেই দুই লাখের জন্য বারবার চাপ দিতে থাকে জিনের বাদশা। তখন শাহাবুদ্দিনের স্ত্রী রেগে কার্টন ছিড়ে শুধু কাগজ দেখতে পান। বুঝতে পারেন তারা প্রতারিত হয়েছেন। পরে সিআইডির সহযোগীতা নেন ভুক্তভোগীরা। চক্রটি ঢাকা থেকে যশোরে গিয়ে বাকি দুই লাখ টাকা এসএ পরিবহনের মাধ্যমে পাঠাতে বলে।

সিআইডির ঢাকা মেট্রো-পশ্চিম এর একটি টিম ফাঁদ পেতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয়- একটি প্রাইভেট কার, নগদ সাড়ে ১৫ লাখ টাকা, দুইটি ভেকু, টাকা তৈরির সাদা কাগজসহ বাক্স, মাটি এবং লাল কালিতে আরবি হরফে লেখা কিছু কাগজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.