মাগুরা সংবাদ:
তাকে বলা যায় সুরের রাজকন্যা।তাকে ফুল দানিতে সাজিয়ে রেখে দুচোখ জুড়ানো যায়।তার সৌন্দর্যের আবির মেখে সুখ নগরে বসতি গড়া যায়।তার মৌনতায় মুগ্ধ হয়ে গৃহত্যাগ করা যায়।তার সুর সৌরভে উন্মাদ করা যায় লক্ষ লক্ষ শ্রোতার মন।অথচঃ ছোট্ট একটা মফস্বল জেলা শহরের অনাদৃতা হয়ে পড়ে আছে সে।মান বিচারে তার স্থান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হলেও কেবল মাত্র সঠিক পরিচর্যা আর সুযোগের অভাবে তার পূর্ণ বিকাশ ঘটছে না। সুরের আকাশে স্বাতী নক্ষত্র হয়ে জ্বলে উঠতে পারছে না।
এ নিয়ে তার কোন আফসোস নেই।সব সময় বিধাতার নজর সবার ওপর পড়ে না। তবে ধর্য্য আর লক্ষ্য ঠিক থাকলে ঠিকই একদিন তিনি তার ভক্তের মন বাসনা পূর্ণ করেন।সংগীত আকাশে মিটিমিটি জ্বলা এই তারাটির নাম কৃষ্ণা সরকার।মাগুরা জেলা শহরেই তার বাস।বাবা ছিলেন কলেজ শিক্ষক।ছোট বেলা থেকেই সংস্কৃতিক বলয়ে তার বেড়ে ওঠা। কলেজ জীবনে সে ছিলো অগনিত ধনীর দুলালের ক্রাশ।যেমন তার তার কন্ঠের যাদু তেমন তার রূপের মাধুর্যতা।সব মিলিয়ে কৃষ্ণা সরকার মানেই
মোহময় মুগ্ধতা।এ যেন স্বর্গের কোন অপ্সরীর মর্তে আগমন। সেই মেয়েটি আজ সীমাহীন অনাদৃতা হয়ে পড়ে আছে মাগুরা জেলা শহরের এক কোনে।জীবনের একটি ছোট্ট ভুল সিদ্ধান্ত তার স্বাপ্নিক ভবিষ্যত তছনছ করে দিয়েছে। মুছে দিয়েছে জীবনের বাসন্তী রঙ। কৃষ্ণা সরকার এখন তার জীবনের অনাকাংখীত অতীতকে মুছে ফেলতে চায়।দীপ্ত কন্ঠে জানাতে চায় আপন অস্তিত্ব। তার কন্ঠ সুধায় আবিষ্ট করতে চায় বাংলা গানের স্রোতাদের। বাংলার সংগীত ভান্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করতে চায়।নজরুলগীতি,রবীন্দ্র সংগীত,ফোক,আধুনিক,হেমম্ত, আশা,হৈমন্তী শুক্লা,প্রভৃতি বিখ্যাত শিল্পীদের গান তার ঠোটস্থ। বাবার মৃত্যুর পর আচমকা এক ঝড়ে তছনছ প্রায় তার শিল্পী জীবন। কিন্তু মাগুরার প্রতিটি সংগীত প্রিয় মানুষ তার গান শুনতে ব্যাকুল। ব্যাক্তি জীবনের প্রতিকুল বিপর্যয় উপেক্ষা করে এখনো প্রতিটি সরকারী বেসরকারী অনুষ্ঠানে তার ডাক পড়ে সবার আগে। মাগুরার মানুষের সংগীত পিপাসা মিটাতে কখনো এতটুকু কার্পন্য করে না কৃষ্ণা সরকার।খ্যাতির বিড়ম্বনা বলে একটা কথা আছে আমাদের সমাজে।সেই সাথে যদি থাকে রূপের ছটা।
তাহলেতো মৌমাছির ভীড় অনিবার্য।এমনি অবস্থার শিকার হয়েছে গানের পাখি কৃষ্ণা সরকার।শহরের প্রভাবশালী একটি মহল তাকে বিপথগামী করতে চায়।কু প্রস্তাবও দেয়। তাদের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় কেউ কেউ আবার ভারতে পাঠিয়ে দেবার হুমকিও দেয়। কিন্তু কৃষ্ণা সরকার এতো লোভী বা ভীতু মেয়ে নয়। সে ভাংবে কিন্তু মসকাবে না।অর্থের মোহে আত্ম মর্যাদা বিসর্জন দেবে না।
বরং তাদের মুখের ওপর চ্যালেন্জ ছুঁড়ে দিয়ে স্বদাপটে টিকে থাকতে দৃঢ় সংকল্প।কৃষ্ণা সরকার বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত একজন শিল্পী।
কেবলমাত্র সঠিক পরিচর্যা আর প্ল্যাটফর্ম না পাওয়ায় আজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আসন করে নিতে পারেনি।তবে সুযোগ পেলে এখনো সে ঝলসে ওঠতে পারে।তার কন্ঠশৈলির যাদুতে মোহিত করতে পারে দেশ বিদেশের লাখ লাখ দর্শক শ্রোতাকে।কৃষ্ণা সরকার কারো দয়া বা অনুকম্পা চায় না। সে তার প্রতিভার স্বীকৃতি চায়। জাতীয় মুল্যায়ন চায়।চায় এ দেশের সংগীত ভান্ডারকে ঋদ্ধ করতে।আমরা আশা করি এ ক্ষেত্রে বেসরকারী টিভি চ্যানেল,মিউজিক কোম্পানি ও সংগীত শ্রষ্টারা এগিয়ে আসবেন।