মাশরাফি ১৯৯১-এর দিকে মাগুরায় বোলিংয়ের অনেক মৌলিক বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হন

খেলাধুলা

মাগুরা সংবাদঃ

 

কীভাবে উঠে এলেন ম্যাশ? ছেলেবেলায় কী নামে ডাকা হতো মাশরাফিকে? মাশরাফির বাবা কী করেন? নড়াইলের চিত্রা নদীর পাড়ের কৌশিক কীভাবে হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার? এমন কত প্রশ্নই না ভক্তের মনে দানা বাঁধে!

মাশরাফির বাবার নাম গোলাম মর্তুজা। মায়ের নাম হামিদা মর্তুজা। বাবা ব্যবসায়ী। মা গৃহিণী। মাশরাফিকে তার মা-বাবা কৌশিক বলে ডাকেন। এ নামেই পরিবারে পরিচিত তিনি। ছেলেবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী ছিলেন মাশরাফি। তাদের বাড়ির পাশেই ছিল স্কুল মাঠ। বড়রা সে মাঠে ক্রিকেট খেলতেন। স্কুলের মাঠে বড়দের ক্রিকেট খেলা দেখে দেখে মাশরাফির ক্রিকেটের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়। উইকেট কিপারের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতেন মাশরাফি। আহত হবে ভেবে বড়রা তাকে সরিয়ে দিতেন। কিন্তু ক্রিকেট নিয়ে যার এত আগ্রহ তাকে তো কেউ আটকে রাখতে পারেনা। মাশরাফিকেও পারেনি।

নব্বইয়ের দশকে নড়াইলের ক্রিকেটার-সংগঠক শরীফ মোহাম্মদ হোসেন উঠতি তরুণদের যত্ন নিতেন। মাত্র ১১ বছর বয়সের কৌশিককে তার ক্লাব নড়াইল ক্রিকেট ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দেন। এ সময় থেকেই মাশরাফির গতি দৃষ্টিগ্রাহ্য হতে শুরু করে।   মাগুরায় বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষণ ক্যাম্পের বিকেএসপি কোচ বাপ্পির সান্নিধ্যে এসে বোলিংয়ের অনেক মৌলিক বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হন। পরের বছর জাতীয় কোচ ওসমান খান নড়াইলে এক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চালাচ্ছিলেন। ওই সময় মাশরাফির আমন্ত্রণ আসে খুলনায় খেলার জন্য। খুলনায় তার গতি ও সুইং হইচই ফেলে দেয়। সেই সূত্রে খুলনা বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে সুযোগ এবং ঢাকায় আসা। পরবর্তীতে সুযোগ পান জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। সেসময় তার বোলিং কোচ অ্যান্ডি রবার্টসের পরিচর্যায় পাল্টে যান মাশরাফি।

অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকতে মাশরাফি দারুণ পারফরম্যান্সের কারণে জিম্বাবুয়ে দলের বিরুদ্ধে ‘এ’ দলের খেলায় তিনি সুযোগ পান। এ নিয়ে সমালোচনা হয়। কারণ মাশরাফি ঢাকার কোনো সিনিয়র ডিভিশন লীগেও খেলেননি। তবে সমালোচকদের মোক্ষম জবাব বোলিংয়ের মাধ্যমে দিয়েছিলেন মাশরাফি। সেই সিরিজে মাশরাফি এক ম্যাচে চার উইকেট নিয়েছিলেন। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তার নাম হয়ে যায় ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। এরপর ইনজুরি ছাড়া আর কেউ মাশরাফি বিন মর্তুজাকে আটকাতে পারেনি।

পড়ালেখায়ও ভালো ছিলেন মাশরাফি। শিক্ষাজীবন শুরু হয় নড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি পাস করেন নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ২০০৩ সালে। এরপর দর্শন শাস্ত্রে অনার্স কোর্সে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু ক্রিকেটের ব্যস্ততার কারণে তার একাডেমিক পড়াশোনা শেষ করা হয়নি।

দেশের কৃতি এই ক্রিকেটারকে সবাই বাইক প্রিয় এবং হাসিখুশি ও উদারচেতা মানুষ হিসেবেই জানে। নিজের শহরে তিনি প্রচণ্ড রকমের জনপ্রিয়। এখানে তাকে ‘প্রিন্স অব হার্টস’ বলা হয়। ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়ার সময় সুমনা হক সুমির সঙ্গে পরিচয়। ২০০৬ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.