শ্রীপুরে বিকাশ প্রতারণায় ভ্যান চালক,দিনমজুর ও কৃষক এখন কোটিপতি

শ্রীপুর

মাগুরা সংবাদ:

শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি:

মাগুরা শ্রীপুরে বিকাশ প্রতারণার মাধ্যমে ভ্যান চালক, দিনমজুর ও কৃষক এখন কোটিপতি। উপজেলার মহেশপুর গ্রাম ইতিমধ্যে বিকাশ চক্রের গ্রাম হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। মহেশপুর গ্রামের সামাদ মণ্ডল, কামরুল মণ্ডল, ইলিয়াজ খাঁ, রিপন মণ্ডল, রসুল মণ্ডল, আতিক মণ্ডল, রবিন মণ্ডল, শাকিল মণ্ডল, রিয়াজ, ফরিদ শেখ, আব্দুলাহসহ বেশ কয়েকজন মিলে গড়ে উঠেছে বিকাশ প্রতারক চক্র। এছাড়াও সানবান্দা, মালাইনগর, আনন্দনগর, গোয়ালদা, চরগোয়ালদা গ্রামের শত শত যুবক এই চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। এই চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত এলাকার গড়াই নদীর কাঁশবন, কলা বাগান, মেহগনি বাগানসহ বিভিন্ন আত্বীয়স্বজনের বাড়িতে বসে প্রতারণার কাজ করে আসছে। এদের অন্যতম প্রশ্রয়দাতা এলাকার চিহ্নিত দালাল দাউদ শেখ টিক্কা। এ চক্রটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিভিন্ন সময় তাদের নামে প্রতারণা মামলা হয়েছে। অনেকে জেল ও খেটেছে। এছাড়া উপজেলার বরিশাট, বরইচারা, চৌগাছি, চর চৌগাছি, সোনাতুন্দীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিকাশ প্রতারণার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে বিকাশ প্রতারক চক্রের সদস্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতারণার মাধ্যমে গাড়ি-বাড়ি ও কোটিপতি হয়েছে এ প্রতারক চক্রের অনেক সদস্য। এক সময় যারা রাজমিস্ত্রির কাজ করতো, দিনমজুরির কাজ করতো, ভ্যান চালাতো, খেয়া ঘাটে নৌকা চালাতো এ ব্যবসা করে আজ তারা কোটিপতি। একদিন কাজ না করলে যাদের খাবার জুটতো না আজ তারা কোটি টাকার মালিক।

বিকাশ প্রতারক চক্রের নেতা সামাদ মণ্ডল রাজমিস্ত্রি কাজ করতো। সামাদ মণ্ডলের বাবা কেসমত মন্ডল (ফকির) পেশায় ছিল ভাঙ্গা নৌকা মেরামতকারী। কিন্তু তার ছেলে কোটিপতি হওয়াই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সামাদ মণ্ডল গোয়ালদা বাজারের পাশে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে জমি কিনেছে। জমি কিনে বিল্ডিং করছে, পাশেই পানের বরজ চাষ করে যার অনুমান খরচ ২৫ লক্ষ টাকা। একটি হেক্সামিটার কিনেছে ৩৬ লক্ষ টাকায়, ১৮ লক্ষ টাকায় কিনেছে একটি মাইক্রো গাড়ি। এছাড়াও অনেক সম্পত্তির মালিক সে। বিভিন্ন সমত্তির মালিকানা নিজের ও আত্নীয় স্বজনের নামে করেছে। সামাদ মণ্ডল ২০১৭ সালে সূত্রাপুর থানার একটি প্রতারণা মামলায় ৩ মাসের জেল খাটে। কামরুল মণ্ডলের বাবা ওয়াজেদ মণ্ডল পেশায় একজন বাবুর্চি। বড় ছেলে কামরুল পেশায় বিকাশ প্রতারক। কামরুলের মা মানুষের বাড়িতে কাজ করতো। তার ছেলে এই ব্যবসা করে অনেক সম্পত্তির মালিক হয়েছে। বাড়িতে বিল্ডিং, দুইটা সুজকি গাড়ি, কিনেছে গোয়ালদা বাজারে জমি। এছাড়া গোয়ালদা ও কোদলা মাঠে জমি কিনেছে। এছাড়াও আরো অনেক সম্পত্তির মালিক সে। কালাম খাঁর ছেলে ইলিয়াজ খাঁ পেশায় একজন কৃষক। তার ছেলে এখন কোটি টাকার মালিক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে এই চক্রটি মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য এলাকায় গেলে প্রতারক চক্রের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাব্বারুল ইসলাম বলেন, শ্রীপুরে বিকাশ চক্রটি মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু এই বিষয়ে থানায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনা। যার ফলে আমরা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.