মাগুরা সংবাদঃ
শহিদুজ্জামান চাঁদ ,শালিখা,মাগুরাঃ
মাগুরার শালিখা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি খাল ও নদী দখল করে সম্পূর্ন অবৈধ ভাবে আঁড়বাধ ও সুতের জাল পেতে রেনুপোনা জাতীয় মাছ ধরছে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ক্ষমতার সীমাহীন দাপট দেখিয়ে সম্পূর্ন গায়ের জোরে এ ধরনের অপরাধ মূলক কাজ তারা প্রায় প্রতি বছরই করে চলেছে। গত বছরের তুলনাই এবছর সব চেয়ে বেশি পরিমানে খাল ও নদীতে এসব আড়বাঁধ ও সূতের জাল পাতা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে ফটকী ও চিত্রা নদী থেকে কয়েকটি আড়বাঁধ ও সূতের জাল উচ্ছেদ হলেও উপজেলার কানুদার খাল,কাজল বীলের খাল,বারাঙ্গার খাল কালিদাস খালির খাল,কানুদার খালসহ প্রায় খালে ও নদীতে প্রভাবশালীরা শতাধিক আড়বাঁধ ও সূতের জাল দিয়ে মা মাছ ধরলেও কোন অপশক্তির কারনে প্রকৃত অপরাধিরা ধোরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এসব প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে মুখ খুলতে পারেনা। কিছু বললেই ক্ষমতার দাপট দেখায় বলে অভিযোগ রয়েছে। গত কাল উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ফটকী ও চিত্রা নদী সহ বিভিন্ন খাল পরিদর্শণ করে দেখা গেছে ছানি আড়পাড়ার বাবলু মেম্বর ও গজদূর্বা গ্রামের দাউদ মেম্বর অবৈধ আড়বাঁধ ও সূতের জাল দিয়ে মাছ ধরছে। এ ছাড়াও দীঘোলগ্রাম এলাকায় খালের মুখে সূতের জাল পাশাপাশি ফটকী নদীতে আড়বাঁধ দিয়েছে দ প্রায় ৫২জন প্রভাবশালী নদী খেকো ব্যক্তিরা। নদী ও খাল দখল করে আড়বাঁধ দিয়ে দেশীয় জাতীয় রেনু পোনা মাছ ধরছে তারা। কোন কোন প্রভাবশালীরা কানুদার খালে আড়বাঁধ দিয়ে মাছ ধরছে। আবার নাঘোসা দেলোয়াবাড়ী ও বারাঙ্গার খালের চার পাশে ভেড়ীবাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরী করে নিয়েছে। যেন তাদের বাপদাদার পৈত্রিক সম্পত্তি। একই ভাবে বরইচারা টু আসবা গ্রামের মধ্যে দিয়ে প্রবাহীত বুরুলের বীল দখল করে সূতের জাল ও আড়বাঁধ দিয়ে মাছ ধরছে এলাকার মাছ খেকোরা। এ ব্যাপারে জমির মালিকগণ কিছু বললে তাদের মামলা হামলার ভয়ভীতিও দেখায় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়। খোজ নিয়ে জানা গেছে এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সরকারি দলের নেতা কর্মীদের ছত্র ছায়ায় থেকে আইন অমান্ন করে এ ধনের অপরাধ করে চলেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ গোলাম রসুলের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, উপজেলার ফটকী নদীতে অবৈধ ভাবে আঁড়বাধ দিয়েছিল গজদূর্বা গ্রামের ইউপি সদস্য দাউদ মন্ডল ও ছানি আড়পাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য বাবলু মোল্যা সহ কয়েকজন ব্যাক্তি। অভিযোগের ভিত্তিত্বে অভিযান চালিয়ে আড়বাঁধগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সূতের জাল গুলোও জব্দ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করি উপজেলার প্রত্যেকটি খাল ও নদীতে যেই আঁড়বাধ কিংবা সূতের জাল দিক না কোন, তা অভিযোগ পেলে উচ্ছেদ করা হবে। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহি অফিসারের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে দাউদ মেম্বর ও বাবলু মেম্বরের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এলাকার কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি বলেছেন মৎস্য অফিস থেকে কোন রকম দায়সারা মত আড়বাঁধ উচ্ছেদ ও সূতের জাল জব্দ করা হয়। যা রাতারাতীর মধ্যে নদী ও খাল পূনরায় ঘিরে ফেলা হয়।এ ব্যাপারে আইন অধিকার বাস্তবায়ন ফোরামের উপদেষ্টা গবেষক শ্রী ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, অভিযান চালিয়ে শুধু আড়বাঁধ উচ্ছেদ কিংবা সূতের জাল জব্দ করলেই হবে না, পাশাপাশি জেল ও জরিমানা করতে হবে। তাহলেই নদী ও খালে আড়বাঁধ ও সূতের জাল দেওয়া বন্ধ হতে পারে বলে আমি মনে করি।