মাগুরা শ্রীপুরে কেঁচো সার উৎপাদনে সফল কৃষাণী রুমানা

শ্রীপুর

মাগুরা সংবাদ:

মাগুরার শ্রীপুরে কেঁচাে সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদন করে সফল রুমানা নামে এক কৃষাণী। এখন তিনি স্বাবলম্বী। তিনি উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের কাজলী গ্রামের রাজ্জাক মোল্যার স্ত্রী। ২০০৮ সালে মুজিবনগর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে সিমিত পরিসরে কেঁচো সার চাষ শুরু করেন তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে তাকে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হয়। সেদিন সিমিত পরিসরে শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর প্রদর্শনীতে ২০ কেজির উপরে আফ্রিকান জাতের কেঁচো রয়েছে। কয়েকদিন আগে তিনি ২৫ কেজি কেঁচো বিক্রিও করেছেন। এখন প্রতি মাসে ২০ টন গোবর থেকে ২৪ টি হাউজে প্রায় ১৫ টন কেঁচো সার উৎপাদন হচ্ছে। যার প্রতি কেজি সার ১৫ টাকা মূল্যে বিক্রি হয়। এখন সে সার ও কেঁচো বিক্রি করে প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করে। উৎপাদিত প্যাকেটজাত কেঁচো সার তাঁর বাড়ি থেকে উপজেলা কৃষি অফিস, সার ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা কিনতে আসছেন। তাঁর এই সফলতা দেখে আশেপাশের মহিলারা উদ্বুদ্ধ হয়ে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করছেন। রুমানার সফলতায় উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে তাকে দিয়ে ৩০ জনের একটি দল গঠন করা হয়েছে।

কেঁচো সার উৎপাদনকারী রুমানা বলেন, কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ১’শ আফ্রিকান জাতের কেঁচো ও ৩ টি হাউজে স্বল্প পরিসরে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) চাষ শুরু করি। এখন আমি প্রতিমাসে সার ও কেঁচো বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করছি। অন্যান্য রাসায়নিক সারের পাশাপাশি এই অর্গানিক সারটির বাজারে মোটামুটি ভাল চাহিদা রয়েছে।

কাজলি বাজারের সার ও কিটনাশক ব্যবসায়ী মুশফিকুর রহমান বলেন, ভার্মি কম্পোস্ট সার পরিবেশ বান্ধব। এতে মাটির ক্ষতি হয় না। অন্যান্য সারের তুলনায় বাজারে এ সারের চাহিদা রয়েছে।স্থানীয়ভাবে আরো এধরনের উদ্দোক্তা গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী আশিষ কুমার সরকার বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি স্বাবলম্বী। তাকে দেখে অনেক মহিলা উদ্বুদ্ধ হয়ে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমরা তাদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা বলেন, কৃষাণী রুমানা মুজিবনগর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বর্তমানে যা বৃহত্তর যশোর-কুষ্টিয়া কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প নামে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন সংস্থার ভার্মি কম্পোস্টের উপর টেইনার হিসেবে কাজ করছেন। প্রতিনিয়ত উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তার সার উৎপাদনের বিষয়ে খেয়াল রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে তাকে বিভিন্ন প্রকার পরামর্শ দেওয়া হয়। তার উৎপাদিত সারের মান ভাল। এছাড়াও প্রতি শতক জমিতে ৩ কেজি কেঁচো সার প্রয়োগ করা হলে ফসলের জন্য তা খুবই উপকারী।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.