মাগুরায় সময়ের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে ঘানি শিল্প

মাগুরা সদর

 

মাগুরা সংবাদ:

সময়ের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে মাগুরায় ঘানিশিল্প। আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে নিত্যনতুন যন্ত্রপাতির আবিষ্কারের ফলে মানুষের প্রতিটি কাজ হচ্ছে সহজ থেকে সহজতর। বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে স্বল্পখরচ ও স্বল্পসময়ে অধিক উৎপাদনের কারণে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ‘ঘানিশিল্প’ আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। ফলে ঘানিশিল্প সংশ্লিষ্ট অনেকেই বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়ছেন।

যারা আছেন তারা বাপ-দাদার এ পেশাকে কোনো রকম আকঁড়ে ধরে রেখেছেন। এক সময় ঘানিশিল্পে গরুর সাহায্যে সরিষা তেল বের করা হত। গৃহস্থরা খাঁটি সরিষার তেল তরি-তরকারিসহ সব ধরনের রান্নার কাজে ব্যবহার করত। এক কথায় ঘানির সরিষার তেল ছাড়া সে সময় রান্না-বান্নাতে যেন গৃহিনীরা আর অন্যকিছু চিন্তাই করতো না। অন্যদিকে ঘানির সরিষার খৈল গরুর খাবার, মাছের ঘের, পানের বরজ ও বিভিন্ন ক্ষেতে ব্যবহার করা হতো। সে সময় ঘানির সরিষার তেলের বিকল্প যেন আর কিছুই ছিল না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঘানির সাথে একটি করে গরুর চোখ বেঁধে কাঁধে জোয়াল লাগিয়ে দেয়া হয়। পরে গরুটি দিনভর চরকীর মতো আপন মনে ঘুরতে থাকে। তখন ঘানির নল দিয়ে টিপটিপ করে তেল বের হতে থাকে। একসময় গৃহস্থরা সেই তেল মাটির পাতিলে করে বাঁশের চোঙ্গ দিয়ে মেপে বাজারে বিক্রি করতো। এ যেন সত্যিই গ্রাম বাংলার ঐহিত্যের অহংকার। কিন্তু বর্তমান ডিজিটাল যুগে সেই তেল ডিজিটাল মাপক যন্ত্র দিয়ে মেপে বিক্রি করা হচ্ছে। কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘানিশিল্প আজ প্রায় বিলুপ্ত। বৈদ্যুতিক যন্ত্রের শব্দে হারিয়ে যেতে বসেছে আদি কালের ঘানি শিল্পের সেই ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.