যে কারনে মাগুরা জেলা গত ৬ বছরে খুলনা বিভাগে ১০ম স্থানে

মাগুরা সদর শিক্ষা

মাগুরা সংবাদঃ  

মাগুরা জেলায় রেকর্ড ভাঙা একটি ঘটনা ঘটেছে! একজন সম্মানিত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মাত্র ৪৬ টি অভিযোগ করেছেন তার এক সময়ের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি বর্গ ।
কিন্তু আবারও সেই পুরনো গল্প। অভিযোগকারীরা তাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চান। অনেক অনুনয় / অনুরোধ তাদের।
অধ্যক্ষ মশাই নাকি তার এতো দিনে তার ভুল
বুঝতে পেরেছেন। তিনি নাকি এখন থেকে ভালো হয়ে যাবেন।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হোল ততোদিনে ওই ঘটনার তদন্ত হয়েছে। যথারীতি ৯০ % অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যেখানে জানানোর, তা করা হয়েছে।

আর এই ঘটনায় অভিযোগকারীরা খুব মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন, কেন তাদের কে না জানিয়ে ঊর্ধ্বতন অফিসে জানানো হোল এ জন্য।

তবে সম্মানিত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, কল্পনাকেও হার মানাবে যে এতো অল্প সময়ে এতো কাণ্ড কিভাবে করতে পারলেন ??!!

বিষয়: মাগুরা সদর উপজেলাধীন শত্রুজিৎপুর কলেজের অধ্যক্ষ জনাব মাহাবুবুল ইসলামের দুর্নীতি প্রসঙ্গে।

জনাব,

যথাযথ সম্মান পূর্বক নিবেদন এই যে, শত্রুজিৎপুর কলেজের অধ্যক্ষ জনাব মাহাবুবুল ইসলাম একজন দুর্নীতিবাজ। অধ্যক্ষ নিয়োগের পর থেকেই সে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না। কলেজের শিক্ষক, অভিভাবকবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী তাকে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ বলেই জানে। সে অর্থ ছাড়া কিছুই বোঝে না। নিম্নে তার দুর্নীতির আংশিক বিবরণ তুলে ধরা হলো।

১। ছাত্র-ছাত্রীদের মাসিক বেতন নেন রশিদ ছাড়াই। অথচ রশিদ বই থাকে তার টেবিলের ড্রয়ারে তালা মারা।

২। উপবৃত্তি ফরম ছাত্র-ছাত্রীর নিকট বিক্রয় করেন ৫০ টাকা দরে।

৩। ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে সার্টিফিকেট প্রতি ২০০ টাকা, মার্কশীট প্রতি ২০০ টাকা, রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১০০ টাকা নেন রশিদ ছাড়া।

৪। পাবলিক পরীক্ষার প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে বিষয় প্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন রশিদ ছাড়া।

৫। পুরাতন বই খাতা বিক্রির টাকা কলেজের ফান্ডে জমা হয় না।

৬। এফডিআর এর টাকার কোন হিসাব কেহ জানেন না।

৭। পাবলিক পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শকের সম্মানী কম দিয়ে বেশি টাকার ভাউচার দেখান।

৮। কলেজে জমা খরচের কোন রেজিস্টার খাতা নেই।

৯। পাবলিক পরীক্ষায় বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ফরম পুরন বাবদ রশিদ ছাড়াই আদায় করেন।

১০। কলেজে ডিগ্রি পর্যায়ে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের নিকট হতে আনুমানিক ৭০ হতে ৮০ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে জমি ক্রয় বাবদ অথচ কলেজের নামে কোন জমি ক্রয় করা হয়নি। সকল টাকাই আত্মসাৎ করা হয়েছে।

১১। কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগের পর হতে কলেজ কমিটিতে এমন লোক অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যারা তার কথায় কোন প্রতিবাদ করেন না।

১২। কলেজ হতে অর্জিত টাকা বাংলার স্যার সঞ্জয় মন্ডল ও তার
অধিনস্থ শিক্ষক লাইব্রেরিয়ান আবুল কালাম আজাদ ভাগ করে নেন।

১৩। ইন্টার শাখা নিয়োগকৃত ক্লার্কদের দিয়ে কাজ না করিয়ে ডিগ্রি শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত নিজস্ব ক্লার্ক সাকিবকে দিয়ে আর্থিক বিষয়ে হিসাবের কাজ করান এবং তাকে ঐ বাবদ কিছু মাশোয়ারা দেন যা সে পাবার যোগ্য নয়। কারণ ডিগ্রি শাখা এমপিওভুক্ত নয়।

১৪। ডিগ্রি শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত পিয়ন সেলিমকে দিয়ে বাড়ীর নিজস্ব কাজকর্ম কারন, তাকে দিয়ে মোটর সাইকেলে করে প্রতিদিন কলেজে আনা নেওয়ার কাজ করান। আর কলেজ ফান্ড থেকে তাকে বেতন দেন। যা সম্পূর্ণ আইন বিরোধী।

১৫। উপবৃত্তি দেওয়ার নাম করে ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে অবৈধ টাকা নেন।

১৬। আনুমানিক ২০১৬-১৭ সালে সরকারি ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয় বাবদ আসা ২০,০০০/- টাকার কোন হিসাব নাই।

১৭। ২০১০ সাল হতে টিউশন বাবদ আসা টাকা শিক্ষকদের না দিয়ে অধ্যক্ষ নিজেই আত্মসাৎ করেছেন।

১৮। কলেজ মেরামত বাবদ আসা সরকারি ১ লক্ষ টাকা ৩নং ইট এনে ১নং ইটের হিসাব দাখিল করেছেন।

১৯। অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগের পর হতে আজ পর্যন্ত কোন হিসাব কোন কমিটির নিকট দাখিল করেন নাই।

২০। পূর্বের অর্থ কমিটি রেজুলেশন করে নিজের কব্জায় নিয়ে ইচ্ছেমত টাকা আত্মসাৎ করছেন।

২১। শিক্ষকদের দুর্বল করে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরণের কলাকৌশল অবলম্বন করেন এবং শিক্ষকরা যাতে তার অধিনস্থ থাকে তার জন্য জঙ্গীবাদের ভয় দেখান ও বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ করেন।
২২। ইসলামী শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক আমিনুল এহসান প্রতিবাদী হওয়ায় তাকে মেয়েলি বিষয়ক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে দেন এবং তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন এবং পরবর্তীতে তাকে অর্থের বিনিময়ে স্বপদে বহাল করেন।

২৩। ২০১৬ সালে ২১ দিন কলেজে না এসে নিজস্ব ক্ষমতা বলে মন্ত্রীর কথা বলে শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করনে। কোন শিক্ষক এর প্রতিবাদ করলে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করেন।

২৪। ২০১৮ সালে নির্বাচনী পরীক্ষায় যে সমস্ত ছাত-ছাত্রী ৩ এর অধিক বিষয়ে ফেল করে তাদের কিছু অংশকে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে গোপনে ফরম পুরণ করান কিন্তু একই রকমের অনেক ছাত্র-ছাত্রীদের ফরম পুরনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন। যাহা সম্পূর্ণ বেআইনী।

২৫। তার অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগের পর হতে ২১.০২.২০১৮ পর্যন্ত কোন দিনও ১২ টা ৩০ মিনিটের পূর্বে কলেজে আসেন নাই।

২৬। কলেজে কোন শিক্ষা সফর করতে দেওয়া হয় না এবং বলেন যে, রেজুলেশন করে শিক্ষা সফর বন্ধ করা হয়েছে। তার নিয়োগের পর হতে কলেজে কোন ক্রীড়া অনুষ্ঠান হয় নাই।

২৭। কলেজে কোন জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না এবং যথাযথভাবে জাতীয় দিবস পালন করা হয় না।

২৮। জরুরী কাজে তাকে ফানে পাওয়া যায় না।

২৯। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাস হতে কলেজে কোন কমিটি নেই। বর্তমানে পকেট কমিটি বানানোর পায়তারা চলছে।

৩০। অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক হাজিরা খাতা বাহিরে থাকে না। হাজিরা খাতা অধ্যক্ষের রুমে তালা মারা থাকে। অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের চিরকুট খাতায় স্বাক্ষর করতে হয়।
৩১। কলেজে স্থাপিত কম্পিউটার ল্যাব কোন ছাত্র ও শিক্ষকদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না।
৩২। কলেজে ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে কোন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয় না। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক এবং ছাত্ররা ডিজিটাল কন্টেন্ট ব্যবহার উপযোগী বিদ্যুৎ লাইন সংস্কারের কথা বললেও তিনি কোন কথায় কর্ণপাত করেন না।
৩৩। কারনে অকারনে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। প্রায়ই বলে থাকেন কেহ আমার বিরুদ্ধে কথা বললে তা হবে মায়ের সাথে জিনা করার সমতুল্য।

৩৪। অধ্যক্ষ মাঝে মাঝে কলেজে না এসে নিজস্ব পিওনের মাধ্যমে ফোন দিয়ে শিক্ষকদের তদারকি করেন ও কলেজ পরিচালনা করেন এবং পরের দিন শিক্ষক হাজিরা খাতায় সহি করে। কারণে অকারণে শিক্ষকদের কোরআন শরীফ ছোয়ান।

৩৫। তার সকল কু-কর্মের সাহায্যকারী ও সাক্ষী কলেজের বাংলা বিষয়ের প্রভাষক সঞ্জয় কুমার মন্ডল ও লাইব্রেরিয়ান আবুল কালাম আজাদ।

৩৬। গত ০৪/০২/২০১৭ ইং তারিখে কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। বর্তমানে কলেজে কোন কমিটি নেই।

৩৭। কোন কোন শিক্ষককে কটাক্ষ করে মোল্যা ওমর ও লাদেন নামে অভিহিত করেন।

৩৮। মাধ্যমিক শাখায় করণিক করুণা বিশ্বাস অসুস্থ্য থাকায় তাকে পদত্যাগ করিয়ে আশরাফ নামে একজনকে উক্ত পদে নিয়োগের পায়তারা করছেন।

৩৯। নতুন আইসিটি ভবনে কোন ক্লাস নিতে দেওয়া হয় না।

৪০। কলেজে এ বছর ২২৬ জন ফরম পুরন করেছে এর মধ্যে ২১০ জনের প্রবেশ পত্র অফিস হতে দেওয়া হয়েছে এবং বাকী ১৬জন ছাত্র-ছাত্রী প্রবেশপত্র গোপনে দেওয়া হয়েছে। সেখানে কি হয়েছে কেউ জানেন না। এছাড়া নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নাই এমন কিছু শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে ফরম ফিলাপ করানো হয়েছে। ২০১৮ সালের প্রবেশ পত্র বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে ফরম ফিলাপ করানো হয়েছে। ২০১৮ সালের প্রবেশ পত্র বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ২০০/- টাকা নেওয়া হয়েছে।

৪১। ২০১৮ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস পালনের পূর্বের রাত্রে নিজস্ব লোক দিয়ে শহীদ মিনার ভাঙ্গিয়ে শিক্ষকদের দায়ী করছেন।

৪২। অফিস সহকারী করুণা অসুস্থ থাকায় তার পরিবর্তে আশরাফ নামে একজন ব্যক্তিকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়ার নাম করে অফিস সহকারীর কাজ করানো হচ্ছে এবং তার মাধ্যমে শিক্ষকদের কর্মকাণ্ডগুলো অধ্যক্ষ সাহেবকে ফোনে অথবা সরাসরি বলতে বলা হচ্ছে যাতে কোন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে না পারেন। এক কথায় সমস্ত শিক্ষকদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে, শিক্ষকেরা এ জিম্মি দশা হতে বাঁচতে চায়।

৪৩। তার মারাত্মক অসুস্থতার সময়ও কলেজের দায়িত্বভার কাউকে অর্পণ করেন নাই। অথচ কলেজে না এসেও পাবলিক পরীক্ষার টাকা নিয়েছেন। কলেজের অভ্যন্তরীন পরীক্ষার সময়ও কলেজে না এসে ক্ষমতাবলে যে দিনগুলোতে কলেজে আসেন নাই সে দিনগুলোর টাকাও নিয়েছে।

৪৪। কলেজের মূল্যবান কাগজপত্রাদি কলেজে সংরক্ষিত নাই।

৪৫। কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শাখায় সৃষ্ট পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ২ জন শিক্ষক মোছা: সাবিয়া সুলতানা ও অচিন্ত বাবুর নিকট থেকে নেওয়া (৪.৫০+৭)=১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার কোন হিসাব নাই।

৪৬। কারণে অকারণে শুধু মিথ্যা কথা বলেন এবং বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অসুস্থতার ভান করেন।

অতএব, জনাবের নিকট বিনীত প্রার্থনা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আপনার সদয় মর্জি হয়।

অভিযোগকারি – আব্দুল আজিজ মোল্লা ও অন্যান্য …।।

এই অন্ধকার পার হয়ে কিভাবে আলো আসবে সেটাই এখন ভাবনার বিষয়।

এদের কারনে মাগুরা জেলা গত ৬ বছর যাবত খুলনা বিভাগে ১০ম স্থানে রয়েছে। এদের উচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদ দিয়ে অন্য কোন ব্যবসা করা।

সুত্র প্রাপ্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published.