মাগুরা সংবাদ:
মাগুরায় ৪ উপজেলায় সোনালী আঁশ হিসেবে খ্যাত পাট চাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এই সব এলাকায় এখনো সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়া হয়। ফলে এক দিকে যেমন কমছে পাটের গুনগত মান নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের।
রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়া হয় আধুনিক পদ্ধতিতে। প্রথমে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে নিতে হয় তারপর পাটের আঁশে রিং আকারে আটি বেঁধে পানির একটি হাউজের মধ্যে জাগ দেওয়া হলে পাটের গুনগত মান ভাল হওয়ার কারণে কৃষকরা পাটের নায্য মূল্য পায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ পাট চাষের আধুনিক পদ্ধতি ও কাটার পর পাট পঁচানোর জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করলেও ঝামেলা জনিত কারণে তা মানছেন না কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় মেস্তা পাট, দেশী পাট ও তোষা জাতের পাট চাষ করা হয়েছে। বিগত বছরে পাটের ভাল ফলন ও দাম আশানুরুপ পাওয়ায় চাষিরা অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পাট চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠছে। গত কয়েক বছরগুলোতে চাষিদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষিজাত ফসলে লোকসান হওয়ার কারণে এলাকার চাষিরা পাটের আবাদে মনোযোগ দিচ্ছে। ফলন ও দাম ভাল পেলে চাষিদের আগ্রহ আরো দিনদিন বৃদ্ধি পাবে এমনটায় আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
চাষিদের কৃষি অফিসের পরামর্শে পাট জাগ না দেওয়ায় সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়ার কারণে পাটের রং কালো ও গুনগত মান কমে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় খোলা রাস্তায় ধুলা-বালির উপর পাট শুকানোর কারণে মান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
ইতিমধ্যেই হাটে-বাজারে পাট বিক্রয়ের জন্য কৃষকরা নিয়ে আসতে শুরু করেছে। মান ভেদে প্রতি মন কাচা পাট ১৮ শ’ থেকে মান ভেদে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত স্থানীয় বাজারে বেচা-কেনা হচ্ছে। পাট চাষে খরচের তুলনায় বাজার মূল্য কম।
একজন কৃষি কর্মকর্তা মাগুরা সংবাদকে বলেন, বিগত বছরগুলোতে পাটের বাজার কম থাকাই এই ফসলের প্রতি চাষিদের আগ্রহ কমে গিয়েছিল। বর্তমান সরকার খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্যে পরিবেশ বান্ধব পাটের মোড়ক বহুবিদ ব্যবহার করায় বর্তমানে পাটের উৎপাদন ও বাজার দর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় প্রান্তিক পর্যায়ে চাষিদের পাট চাষের আগ্রহ অনেকটায় বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু পাট জাগ পদ্ধতি বিষয়ে কৃষকরা রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট দিতে নারাজ। সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়ায় গুনগত মান খারাপ হওয়ার কারণে চাষিরা নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।