মাগুরা সংবাদ:
শহিদুজ্জামান চাদ, শালিখা,মাগুরা :
খুলনা মেডিকেলের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা সন্দেহে ভর্তি থাকা দুই জন মৃত ব্যাক্তির মধ্যে একজন মাগুরার শালিখা উপজেলার তালখড়ী পিয়ারপুর গ্রামের আনছার আলী৷ তার মৃত্যুর পর পরিবারের লোকারা মরদেহ নিয়ে বাড়িতে এনে বিষয়টি গোপন করে স্বাভাবিক মৃত ব্যাক্তির ন্যায় গোসল, জানাজা ও দাফনের কাজ সম্পুর্ন করে। স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ শত শত গ্রামবাসী জানাজাসহ দাফনের কাজে অংশ নেয় বলে জানা গেছে। নমুনার রিপোর্ট না আসায় এ ধরনের দাফনের ঘটনা জানাজানির পর বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন গ্রামবাসীসহ স্থানীয় প্রশাসন।
বিভিন্ন সুত্র হতে প্রাপ্ত তথ্যমতে, মঙ্গলবার খুলনা মেডিকেল কলেজের করোনা ইউনিটের ডাক্তার শৈলেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের বরাত দিয়ে শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপর্সগ নিয়ে আইসোলেশনে থাকা দুই ব্যাক্তির মৃত্যু ও তাদের নমুনা সংগ্রহের খবর জানানো হয়। যাদের মধ্যে একজনের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলা ও অপর ব্যক্তি মাগুরার শালিখা উপজেলার পিয়ারপুর৷ গত সোমবার রাতে চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনায় নিয়ে গেলে তার উপসর্গ দেখে ডাক্তার তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করলে চিকিৎসারত অবস্থায় ভোর রাত্রে তার মৃত্যু হয়। সকালে পরিবারের সদস্যরা মরদেহ নিয়ে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রউনা দেয়৷ বাড়িতে পৌঁছে বিষয়টি গোপন করে স্বাভাবিক মৃতের ন্যায় গোসল, জানাজাসহ দুপুরে দাফনের কাজ সম্পুর্ন করে। এদিকে মৃত ব্যাক্তি দীর্ঘদিন যাবৎ লিভারের জোটিল রোগে ভুগছিলেন বিধায় বিষয়টি স্বাভাবিক মৃতের ঘটনা ভেবে গ্রামবাসীর সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নিজেও এ জানাজায় উপিস্থিত ছিলেন বলে জানান।এ ব্যাপারে সন্ধায় স্থানীয় তালখড়ী ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজ উদ্দিন মন্ডলের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বিষয়টি শুনে প্রথমেই জানাজায় নিজের উপিস্থিতি নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েন। পিয়ারপুর গ্রামের মৃত আনছার আলীর পরিবার গ্রামবাসীকে কিছু না জানিয়ে মরদেহ এনে তড়িঘড়ি করে দাফনের কাজ সম্পুর্ন করলেও মৃতব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবৎ লিভারের জটিল রোগে ভুগছিলেন বিধায় বিষয়টি স্বাভাবিক বলে ধারনা করে তিনি নিজেও সকলের সাথে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়ে সেখানে গোসল, দাফনসহ নানা কাজে নিয়োজিতদের ব্যাপারে আশু ব্যাবস্থা গ্রহন জরুরী এবং সেই সাথে জানাজায় অংশ নেয়ার জন্য বয়স জনিত কারণে নিজেও শংকিত হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ ব্যাপারে শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানভীর রহমান জানান, এ ধরনের বিষয় আমার জানা ছিলনা। তবে কিছুদিন আগে তালখড়ী ইউনিয়নের ওই গ্রামের এক ব্যক্তির করোনা সন্দেহের ব্যাপারে গ্রামবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডাক্তার তার লিভারের জটিল সমস্যার কথা উল্লেখ করেন বলে জানান তিনি। রিপোর্ট আসার আগে এ ধরনের জানাজা ও দাফনের বিষয়টি খোজ নিয়ে ব্যাবস্থা নেবেন বলে জানালেন তিনি।
উল্লেখ্য এখন পর্যন্তু শালিখা উপজেলায় দুইজন ব্যাক্তি করোনা সনাক্ত হয়েছেন। ২৫ এপ্রিল বাঘারপাড়ার বাসিন্দা আদাডাঙ্গী এলাকায় অবস্থানকারী একজন ইমাম এবং পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর একজন টেকনিশিয়ানের শরীরে করোনার অস্তিত্ব মেলে। ইতিমধ্যে সীমাখালী-যশোরের সীমান্তবর্তী এলাকায় লকডাউনসহ কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে৷ এ অবস্থায় এ ধরনের ঘটনায় শংকিত স্থানীয় এলাকাবাসী।