মাগুরা শ্রীপুরে চুরির অপবাদে যুবককে মধ্যযুগীও কায়দায় নির্যাতন

শ্রীপুর

মাগুরা সংবাদ:

শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি:

মাগুরার শ্রীপুরে চুরির অপবাদে মেহেদী হাসান (২৬) নামে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের মকর্দ্দখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হলে রোববার বিষয়টি জানাজানি হয়। নির্যাতনের পর ওই যুবককে শ্রীপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে তাকে মদনপুর একটি চুরির মামলায় অজ্ঞাত আসামী করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সব্দালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মিল্টন ও ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বাকি মোল্লার মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জেরে বেশ কিছুদিন আগে মেহেদি হাসানকে মুরগী চুরির মামলায় আটক করে শ্রীপুর থানা পুলিশ। পরে তাকে দ্বারিয়াপুর কালী মন্দিরের চুরির ঘটনায় অজ্ঞাত আসামী করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। প্রায় এক মাস জেল হাজতে থাকার পর জেল থেকে বের হয়। জেল থেকে বের হওয়ার পর আবারো তাকে চুরির অপবাদে লিখন মোল্লার ঘরের বারান্ডায় বেঁধে বেধড়ক মারধর করে।

মেহেদি হাসানের বড় বোন রত্না বেগম বলেন, আমার ভাইয়ের মাথায় সমস্যা আছে। জেল থেকে বের হওয়ার পর শুক্রবার সকালে টেংগাখালি বাজারে যাচ্ছিল। এ সময় রাস্তা থেকে লিখনের বাড়িতে নিয়ে খুব মারছিল। পানি খেতে চাইলে পানি পর্যন্ত খেতে দেইনি ওরা।

চাচাতো ভাই সোহেল বলেন, বাকি মোল্লা, ফরহাদ মোল্লা, নিরোজ মোল্লা, লিখন, রকিব, আলামিনসহ ২০ থেকে ২৫ জন মিলে খুৃৃৃটিতে বেঁধে তাকে মারধর করে। নিরোজ মোল্লার বাবা
মজিবর রহমান তালিকাভূক্ত রাজাকার তাদের বাড়িতে বেঁধে তাকে মারধর করে৷ প্লাস দিয়ে আঙ্গুল সেচে দিয়েছে। হাত ও পা ভেঙে দিয়েছে। এমনকি মারার পর ওরা খেচুড়ি রান্না করে খেয়েছে।

অভিযুক্ত বাকি মোল্লা বলেন, বাড়ির মহিলাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করায় মহিলারা ওকে বেঁধে রাখে এবং মারধর করে। পরে আমি এসে মারতে নিষেধ করি। পুলিশকে আসতে বলি। পুলিশ আসলে পুলিশের হাতে তুলে দিই।

অভিযুক্ত লিখনের স্ত্রী জাহিদা বেগম বলেন, রাতে আমাদের বাড়ি থেকে মুরগী এবং পাশের বাড়ি থেকে কবতর চুরি করে। এবং আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। সে প্রায়ই এগুলো করে। ওইদিন আমার উপর হামলা করে। বাধ্য হয়ে বেঁধে রাখি। পরে পুলিশ এসে থানায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাব্বারুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের বিষয়ে থানায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.