র‍্যাব পরিচয় দিয়ে সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রলোভন,মাগুরার সাইফুল গ্রেফতার

শ্রীপুর

মাগুরা সংবাদ:

র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকুরির প্রলোভন দেয়া হচ্ছে। কাউকে মেডিকেল পর্যন্ত করিয়ে আবার কাউকে ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এরকম প্রতারক একটি চক্রকে ধরে ফেলেছে কুষ্টিয়ার র‌্যাব।

কুষ্টিয়া র‌্যাবের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, এ ধরণের প্রতারণার খবর আমরা প্রায়ই পাচ্ছিলাম। আর সে কারণেই কুষ্টিয়া ক্যাম্পের গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করা হয়। সোর্স মারফত তথ্য যাচাই বাছাই করে একটি চক্রকে হাতে নাতে ধরতে সক্ষম হই আমরা।

র‌্যাব জানায়, গত ২ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটায় কুষ্টিয়ার কোর্টপাড়ার অভিজাত ধোঁয়া রেস্টুরেন্টে অভিযান চালানো হয়। সেখানে চাকরির প্রলোভনদাতা ভূয়া র‌্যাব কর্মকর্তা ও চাকরি প্রত্যাশীরা চাকরির ডিল করছিলেন। সে সময় প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে আটক করে র‌্যাব।

এদের মধ্যে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার কালীনগর গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম (৩০) ও মো. তাজন হোসেন (৩২) র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দেন। আর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার বানিয়াপাড়ার সাবান আলী ঘটক (৬৮) ছিলেন তাদের দালাল।

এরা সেখানে কথা বলছিলেন পারভেজ ও রাকিব নামের দুজনের সঙ্গে। চাকরির প্রলোভেন দেখিয়ে তারা ইতোমধ্যেই পারভেজের কাছ থেকে ৪৯ হাজার ও রাকিবের কাছ থেকে ২০ হাজার হাতিয়ে নিয়েছেন। বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে এরইমধ্যে কুষ্টিয়ার মডার্ন ডায়াগনস্টিক থেকে তাদের মেডিকেলও করিয়েছেন।

এর আগে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের রহিতুল্লাহ নামের একজনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে সেনাবাহিনীর নিয়োগপত্র দেন এই চক্র। পরে ওই চাকরিপ্রত্যাশী জয়েন করতে গিয়ে বুঝতে পারেন নিয়োগপত্র ছিল ভূয়া। পরে তারা মাগুরাতে মামলাও করেন।

কুষ্টিয়ার ধোয়া রেস্টুরেন্টে এই তিন জনকে আটকের সময় তাদের কাছে ভুয়া র‌্যাব আইডি কার্ড উদ্ধার করে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব। তারা স্বীকার করে- ঢাকার আশকোনার একটি কম্পিউটার দোকান হতে তারা র‌্যাবের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করেছে।

এরপর আসামিদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় গিয়ে তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী ঐ কম্পিউটার দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সেখান থেকে দুটি ভূয়া র‌্যাবের পরিচয়পত্র, সেনাবাহিনীর ভুয়া নিয়োগপত্র উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে এসএম জাহিদুল ইসলাম (২৮) ও কাজী শাহীন (৩০) নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে কুষ্টিয়া আনা হয়। পরবর্তীতে মামলা দিয়ে তাদের কুষ্টিয়া মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়।

কুষ্টিয়া র‌্যাবের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, এ ধরণের প্রতারকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। জনগণকে সচেতন হতে হবে- যেন এদের খপ্পরে না পড়ে। তিনি বলেন, প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.