মাগুরায় স্ত্রীকে আগুন দিয়ে হত্যার এক যুগ পর স্বামীর ফাঁসির আদেশ

মাগুরা সদর

 

মাগুরা সংবাদ:

মাগুরায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার এক যুগ পর এক রায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচারক প্রণয় কুমার দাস এ রায় ঘোষণা করেন। ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রীকে মারপিট করে ও গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করে শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অসিত বিশ্বাস। বর্তমানে পলাতক রয়েছে সে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বরিশালের আগৈলঝরা উপজেলার প্রফুল্ল গাইনের মেয়ে প্রার্থনা রানী (২৮) স্বনির্ভর বাংলাদেশ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে ২০০৬ সালের দিকে মাগুরা শ্রীপুরে আসেন। কর্মস্থল শ্রীপুরের খামারপাড়া এলাকায় নিত্যগোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ভাড়া থাকাকালে তার ছেলে অসিত বিশ্বাসের সাথে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে।

পরবর্তীতে তারা বিয়ে করে এক সাথে বসবাস করতে থাকে। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় তারা পাশ্ববর্তী হরিন্দী গ্রামে আব্দুল মান্নানের বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন। তাদের ঘরে একটি কন্যা ও একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়। কিন্তু পেশায় স্বর্ণকার অসিত বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রার্থণার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেওয়ার জন্য বারবার চাপ দিতে থাকে। এরজন্য তারা তাকে অব্যাহতভাবে নির্যাতন ও মারপিট করতে থাকে। বিভিন্ন সময় প্রার্থণা বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর দাবিকৃত মোটা অংকের যৌতুকের টাকা এনেও দেন। সর্বশেষ যৌতুকের অর্থের দাবিতে গত ২০০৮ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি রাতে অসিত বিশ্বাস তাকে মারপিট করে ও গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে।

পরদিন ২ ফেব্রুযারি ২০০৮ প্রার্থনার মামা বরিশালের আগৈলঝরা গ্রামের গনেশ চন্দ্র কর এর ছেলে গৌতম কর শ্রীপুর থানায় স্বামী অসিত বিশ্বাস ও তার মা নিভা রানীকে আসামি করে হত্যা ও নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেন। মামলার সাক্ষী প্রমাণ গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচার অসিত বিশ্বাসকে দোষি সাব্যস্ত করে ফাঁসি রায় ঘোষণা করেন। তবে নিভা রানী বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ থাকায় আদালত তাকে খালাস দেন।

মামলা চলাকালে আসামি অসিত কিছুদিন হাজত বাস করে। পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। যে কারণে আসামির অনুপস্থিতেই বিচারক এ রায় ঘোষণার করেন ট্রাইবুনালের বিচারক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.