মাগুরায় রাতের আকাশে উড়ছে ড্রোন

মাগুরা সদর

মাগুরা সংবাদ :

চলছে করোনাকাল। করোনা ভয়ে কাটছে মাগুরাসহ সারাদেশের মানুষের দিন। ঢাকাসহ বাইরে কাজ করা মানুষেরাও ফিরেছেন ঘরে। ঠিক এই সময়ে মাগুরার গ্রামগঞ্জে রাতের নিশিতে শিশু কিশোররা মেতে উঠেছে ঘুড়ি উৎসবে। ঘুড়ির মধ্যে এলইডি বাতি জ্বালিয়ে দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন আকাশে। হঠাৎ কেউ দেখলে আকাশের তারা বা ড্রোন ভেবে ভুল করতে পারেন। করোনার লকডাউনের মধ্যে ঘুড়ি উড়ানোর এই দৃশ্য গ্রাম বাংলায় ভিন্নধর্মী এক মাত্রা যোগ করেছে। ঘরবন্দি শিশু কিশোররা সময় কাটানোর জন্য ঘুড়িকেই বেছে নিয়েছেন। রাতের আঁধারে শত শত ঘুড়ি উড়ানোর দৃশ্য চোখে পড়েছে সদর ও মহম্মদপুর উপজেলার গ্রাম এলাকাগুলোতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘড়িতে তখন রাত ৮টা। সদর ও মহম্মদপুর উপজেলার একাধিক এলাকায় আকাশে উড়ছে অসংখ্য ঘুড়ি। হঠাৎ দেখলে মনে হবে আকাশের তারাগুলো নিচে নেমে এসে খেলা করছে। আবার কেউ ঘুড়িতে লাইটের আলো দেখে ড্রোন হিসেবে ভাবতে পারেন। স্থানীয়রা জানালেন আকাশে এমন শত শত ঘুড়ি আগে কখনো উড়াতে দেখেননি তারা। আগে এসব এলাকায় কেবল দিনের বেলাতে উড়ানো হতো ঘুড়ি। কেউ কেউ রাতের বেলা ঘুড়িতে হারিকেন বেঁধে উড়িয়ে দিতেন। রাতে শত শত ঘুড়ি উড়ানোর দৃশ্য এই প্রথম তারা দেখেছেন।

ঘুড়িগুলো মাটি কয়েক হাজার ফুট উচ্চতায় শূন্যে ভাসছে। তাতে লাল নীল বাতি জ্বলছে নিভছে। লাটাই হাতে সূতো ধরে রেখেছে শিশু কিশোররা। চারপাশে হালকা বাতাস। নীরব প্রকৃতি বুকে ঘুড়ি উড়ানোর নয়ানাভিরাম দৃশ্য যে কোন প্রকৃতিপ্রেমিকেই মুগ্ধ করবে।

ঘুড়ি উড়ানো শিশু কিশোরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনায় লকডাউনের মধ্যে ঘরে বসে থেকে একগুয়েমি এসে গেছে তাদের। সেই সাথে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় লম্বা ছুটি মিলেছে। তাই গত এক সপ্তাহ ধরে তারা ঘুড়ি উৎসবে মেতেছে। প্রতিটি ঘুড়ি বাঁশ কেটে তারা নিজেরাই তৈরি করছে। রাতে উড়ানোর জন্য ঘুড়িতে মোবাইলের ব্যাটারির সংযোগে বিশেষভাবে জিরো পাওয়ারের ছোট ছোট বিভিন্ন রঙের এলইডি বাতি জুড়ে দেয়া হয়। এরপর বাজার থেকে শক্ত সূতো কিনে তা লাটাইয়ে পেঁচিয়ে নেয়া হয়। প্রতিটি ঘুড়ি তৈরিতে তাদের দুই শ থেকে আড়াই শ টাকা খরচ হয়েছে। তবে যে যার মতো করে আলোকসজ্জা করে থাকে। যার ঘুড়িতে যত বেশি বাতি থাকে তার ঘুড়ি আঁধারে ততবেশি উজ্জ্বল দেখায় এবং অনেক দূর থেকে দেখা যায়। বেশির ভাগ ঘুড়িই চিলঘুড়ি। তবে আলাদা আলাদা আকৃতি দিয়েছেন কেউ কেউ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.