ঝিনাইদহ শৈলকুপায় সেনা ও পুলিশ সদস্যের বাড়িতে দূর্ধর্ষ ডাকাতি

বাংলাদেশ

মাগুরা সংবাদঃ

 

মনিরুজ্জামান সুমন,ঝিনাইদহ:

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সেনা সদস্য ও পুলিশের বাড়িতে গভীর রাতে দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সংঘবদ্ধ ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে নগদ টাকা, স্বার্ণালংকার ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার গভীর রাতে উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়নের মীনগ্রাম এলাকায়।

জানা যায়, উপজেলার মীনগ্রাম এলাকার মৃত পুলিশ সদস্য ওলিউজ্জামানের বাড়িতে গভীর রাতে একদল ডাকাত প্রবেশ করে। এসময় মৃত পুলিশ সদস্যের বড় ছেলে এ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান, মেজো ছেলে বর্তমান পুলিশ কনস্টেবল রাশিদুল ওরফে কালিমউদ্দিন ও ছোট ছেলে সেনা সদস্য আশিকুজ্জামানের পরিবারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে।

পুলিশ কনস্টেবল রাশিদুল ওরফে কালিমউদ্দিন জানান, ৭/৮ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতদল গভীর রাতে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় তার ৪ বছর বয়সী ছেলের গলায় ধারালো ছুরি ঠেকিয়ে পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। এরপর বাড়ীর মহিলাদের ব্যবহৃত প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, লক্ষাধিক নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে নির্বিঘেœ চলে যায়। পরে পরিবারের লোকজনের চিৎকার চেচামেচিতে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে ঘটনাটি ডাকাতি নয়, চুরি বলে দাবী করেন শৈলকুপা থানার ওসি কাজী আয়ুবুর রহমান।

ঝিনাইদহের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী জানান, ডাকাতি হয়নি যে ঘরে বাড়ির লোক ঘুমিয়ে ছিল। পাশের ঘর থেকে চুরি হয়েছে। এঘটনায় থানায় একটি চুরি মামলা হচ্ছে। চোরদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১০ই সেপ্টম্বের রবিবার রাত ১২টার দিকে বড়দা গ্রামের আক্কাস আলী বিশ^াসের বাড়ীতে অস্ত্রসহ ১০/১৫ জনের সংগবদ্ধ ডাকাত দল প্রবেশ করে। এসময় বাড়ীতে থাকা লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ঘরের মধ্যে খাটের সাথে হাত-পা বেধে আটকে রাখে। পরে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৬টি মোবাইল ফোন ডাকাতি করে নির্বিঘেœ পালিয়ে যায় ডাকাত দল।
একেরপর এক চুরি, ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে। অপরদিকে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের বড়দাহ,চড়িয়ারবিল ও দুধসর এলাকায় রাতে গাছ ফেলে প্রায়শ: ডাকাতির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল। এমনকি শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) কাজী আয়ুবুর রহমানের গাড়ীর সামনে দুধসর এলাকা থেকে গাছ ফেলে ডাকাতদল।

গোপন সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও চুরি ডাকাতি বন্ধে বিশেষ কোন ভূমিকা না থাকলেও আটক বাণিজ্যে নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন থানার ওসি। প্রায়ই বিশেষ অভিযানের রবাত দিয়ে রাতে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ১০/১২ জনকে আটক করা হলেও বিভিন্ন মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন মাত্র ৩/৪ জনকে। বাকীদের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া গত ১সেপ্টম্বের নাশকতা মামলার কথা বলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২ জনকে আটক করে। পরে এমপি সাহেবের দোহায় দিয়ে সকালে তাদের সাড়ে ৩লক্ষ টাকার বিনিমিয়ে সবাইকে ছেড়ে দেয়। যা থানা হাজতীদের রেজিস্টার দেখলে সত্যতার প্রমান মিলবে।

আটক বাণিজ্যের সুবিধার্থে ও নিজের অপকর্ম ঢাকতে থানার সিসি ক্যামেরাও অচল করে রেখেছেন দীর্ঘদিন। এছাড়া ডিউটি অফিসারের রুমে থাকা আসামীদের নাম ঠিকানার রেজিস্ট্রার খাত্ওা গায়েব করে রেখেছে। তিনি বেশীরভাগ সময় অফিসে না বসে বাসায় অফিস করেন, ফলে আইনের সহায়তা নিতে আসা অনেক সাধারণ মানুষ আইনী সহযোগিতা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.