অপহরন নয় স্বামীর হাত ধরে পালিয়েছি..ভিডিও বার্তায় ঝিনাইদহ শৈলকুপার ডরিন

বাংলাদেশ

 

মাগুরা সংবাদঃ

 

 জেলা প্রতিনিধি,ঝিনাইদহ:

 

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় প্রেমের বিয়ে মেনে না নেওয়ায় পিতা মাতা নির্যাতন করতো। সহ্য করতে না পেরে স্বামীর হাত ধরে পালিয়েছি বলে দাবি করে একটি ভিড্ওি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়েছে ডরিন (১৬) নামে এক ৮ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী। ডরিন নিখোজ হওয়ায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেছে তার বাবা। ঘটনা ঘটেছে উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়নের পদ্মনগর গ্রামে। এই গ্র্রামের আলমগীর হোসেন বাদশার মেয়ে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ডরিন (১৬) প্রণয়ে জড়িয়ে পড়ে প্রতিবেশী প্রবাসী নজরুলের ছেলে সাজন (২৩) এর সাথে। গ্রামের অনেকেই তাদের ভালবাসা সম্পর্কে জানত। গত ৫/৮/২০১৮ তারিখে ঈদুল আজাহার ১৭ দিন আগে তারা ঝিনাইদহে আদালতে তারা হাজির হয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বয়স সংশোধন করে বিয়ে করে। ডরিন সাজনের সাথে বিয়ের কথা বাড়িতে বলে দেয়। এরপর থেকে শুরু হয় তার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। এই নির্যাতনের কারনে গত ২১ আগষ্ট ২০১৮ তারিখ মঙ্গলবার ঈদের আগের দিন সকালে নিজ বাড়ী হইতে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে ডরিন তার স্বামীর সাথে নিরদ্দেশ হয়ে যায়,এই তথ্য ভিডিওি ফুটেজের মাধ্যমে জানিয়েছে ডরিন। এঘটনায় ডরিনের বাবা আলমগীর হোসেন বাদশা শৈলকুপা থানায় একটি নারী ্ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি অপহরন মামলা দায়ের করে। যাহার মামলা নং-১৭ তাং ২১/০৮/২০১৮। মামলার আসামীরা হলো,পদ্মনগর গ্রামের বিদেশ প্রবাসি নজরুল ইসলাম মোল্যার ছেলে সাজন (২৩) ও চররুপদাহ গ্রামের মৃত আঃ বারিক বিশ্বাসের ছেলে রান্নু (৪৫)সহ আরো ২/৩জন অজ্ঞাত। বাবা মায়ের ভয়ে ওরা বাড়ি ফিরে আসে না। প্রায় ২ মাস হয়ে গেল। এই ঘটনায় গত কয়েকদিন আগে বিভিন্ন প্রত্র-প্রত্রিকা ও অনলাইন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে”দুই মাস পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার হয়নি শৈলকুপার অপহৃত স্কুল ছাত্রী ডরিন” এই শিরোনামে সংবাদ প্রচার হয়। প্রচার জানতে পেরে ডরিন ও সাজন একই স্থানে বসে একটি ভিডিও ক্লিপ ছেড়ে দেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে ডরিন বলে,আমি অপহৃত নয় আমরা দুজন দুজকে ভালোবাসি,ভালোবেসে ঈদের এক মাস আগে আমরা বিয়ে করেছি। বিয়ের কথা বাড়িতে জানার পর বাবা মা বাড়িতে নির্যাতন করত। অন্য জায়গায় আমার বিয়ে ঠিক করে, বিষয়টি আমি জানতে পেরে সাজনের হাত ধরে ঈদের আগের দিন বাড়ি থেকে পালিয়ে আসি। আমার বাবা মা যা করছে তা তাদের সব ভুল। আমি স্বইচ্ছাই বিয়ে করেছি। আমার পরিবার যদি সাজন কে মেনে নেয় তাহলে আমি বাড়ি ফিরে আসবো। এই ঘটনা নিয়ে ডরিনের মা পারভিন জানান,ত্রা মেয়েকে ফিরে না পেলে তারা আদালতে আরেকটি গুম-হত্যা মামলা দায়ের করার প্রস্ত্রুতি নিচ্ছেন বলে সাংবাদিকদের জানান। এদিকে গত ০৯ সেপ্টেম্বর রবিবার জেলা আইন শৃংঙ্খলার মিটিংয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসককে, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (হরিণাকুন্ডু-শৈলকুপা) সার্কেল তারেক আল মেহেদী এ ঘটনার বিষয়সহ ০৫/০৮/২০১৮ তারিখের নোটারী পাবলিকে বিবাহ সংক্রান্ত এ্যাফিডেভিট নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা আইন শৃংঙ্খলা মিটিংয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এসময় সিদ্ধান্ত হয় যে, নোটারী পাবলিক বিবাহ সংক্রান্ত এ্যাফিডেভিট গ্রহণ যোগ্য নহে। এছাড়া বাল্য বিবাহ থেকে বিরত থাকার জন্য ঝিনাইদহ নোটারী পাবলিক এর দুইজন আইনজীবিকে উক্ত মিটিংয়ে আইন অমান্য করে বাল্য বিবাহ সংক্রান্ত এ্যাফিডেভিট পুনরায় যাতে না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেন। এমনকি ডরিনকে উদ্ধার করে আসামীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মাধ্যমে শাস্তির জন্য মিটিংয়ে উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাসকে নির্দেশ দেন। অথচ এই অষ্টম শ্রেণী পড়–য়া ছাত্রী ডরিনকে বাল্য বিবাহের সহযোগিতা করার জন্য আইনজীবীর বিরুদ্ধে কোন শাস্তির ব্যবস্থা হয়নি। এখন সচেতন মহলের প্রশ্ন, যারা ভালবাসা করে আইনজীবীদের মাধ্যেমে বিয়ে করে সংসার করছে তাদের সংসার ভেঙ্গে দিতে হবে কেন? এই কারনে যদি দুই প্রাণ ঝরে যায় তাহলে এর দায়ভার কে নেবে?। আইনজীবী যদি সহযোগিতা না করত তাহলে কি এদের বাল্য বিবাহ হত?।

Leave a Reply

Your email address will not be published.